বস্তি বাড়ির ইতিকথা – পর্ব ১





 সেই বিকেল থেকে ঝমঝম করে যে বৃষ্টি শুরু হয়েছে তার আর থামার নাম নেই। ঘন ঘন মেঘের ডাক আর বিদ্যুতের ঝলকানি দিয়ে আকাশ এক মরণ তান্ডব শুরু করেছে। ঝড় শুরু হতেই কেন যে লাইট অয়ালারা লাইট কেটে দেয় সেটা আজও তার অজানা। হ্যারিকেনে তেল নেই, তেল কেনার পয়সা ছিল পকেটে কিন্তু ততক্ষণে মানসের মুদির দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অন্ধকারে এদিক অদিক হাতড়ে একটা মোমবাতি খুঁজে পেল আর সেটাই জ্বালিয়ে নিল। মোমবাতির অল্প আলোতে ঠিক ভাবে ঠাহর পাওয়া যায় না, কিছু পরে চোখ আন্ধকারের সাথে মানিয়ে যেতেই দেখতে পেল যে বিছানাটা ভিজে গেছে। বিছানা বলতে একটা ভাঙ্গা তক্তপোষের ওপরে মাদুর একটা কাঁথা আর একটা শত ছিন্ন মশারি, বালিশ নেই আর মশারিটা মশা থেকে ওকে আর বাঁচাতে পারে না তাই অটাকে দলা পাকিয়ে মাথার নিচে দিয়ে বালিশ বানিয়ে নেয়। ভাঙ্গা টালির চাল থেকে এদিক অদিক থেকে টপ টপ করে জল পড়ছে। গত বছর একটা প্লাস্টিক কিনেছিল কিন্তু সেটার অনেক জায়গায় ফুটো হয়ে গেছে, বর্ষার জলের বাঁধ আর তাতে আটকায় না। বাড়ি ফেরার সময়ে গলির মুখের দোকান থেকে রুটি তরকারি কিনে এনেছিল সেটাই চিবোতে বসে গেল। ধুস শাআআআলা, রুমা আবার ওকে পোড়া রুটি ধরিয়েছে, মাগিটাকে কাল আচ্ছা করে রদ্দা না দিলে হচ্ছে না। বিকেলে এক প্যাকেট ঝাল মুড়ি কিনেছিল আর প্লাস্টিকে বাঁধা চোলাই। ভেবেছিল রুটি খাবার আগে বেশ আয়েশ করে চোলাই গিলে তবে রুটি মারবে, কিন্তু রাত বাড়তে না বাড়তেই যে ভাবে ঝড়ের তান্ডব শুরু হয়েছে আর ঘরের যা অবস্থা হয়েছে তাতে মদ খাবার মানসিকতাটা উবে গেল।


রুটি চিবোতে চিবোতে ভাবতে বসল কি যেন একটা নাম ছিল ওর। হ্যাঁ তাই ত, ওর মা ওর একটা নাম রেখেছিল কিন্তু সেই নামে ওকে কেউ ডাকে না তাই সেই নাম নিজেই প্রায় ভুলতে বসেছে, কি নাম… কি নাম? বিশ্বজিৎ মন্ডল, কিন্তু ওই নামে কেউ ওকে চেনে না, বস্তির সবাই ওকে দানা বলে ডাকে। ছোটবেলা থেকে দানবের মতন চেহারা, তামাটে গায়ের রঙ, টেরি কেটে আঁচড়ানো চুল, মাথায় প্রায় ছয় ফুটের মতন, বলিষ্ঠ দুই বাহু সব মিলিয়ে যেন কষ্টি পাথরে খোদা মূর্তি। না ওই মূর্তি নিয়ে কিছু করতে পারল না। বাবা কোন কালে ওদের ছেড়ে চলে গেছিল জানে না, তবে বস্তির লোকের মুখে পরে শুনেছে যে ওর বাবা কালী ঘাটের কোন বেশ্যা মেয়ের প্রেমে পরে ওর মাকে ছেড়ে চলে গেছে। ওর মা এর বাড়ি ওর বাড়ি বাসন মেজে ঘর ঝাড় দিয়ে কোন রকমে ওকে পড়াতে চেষ্টা করেছিল, পড়াশুনাতে বেশ মন ছিল। খুব কষ্টে এরতার বই ধার করে, বারো ক্লাস পর্যন্ত পড়েছিল, কিন্তু মা মারা যাওয়াতেই সব ভুন্ডুল হয়ে যায় ওর জীবনের অঙ্ক। বস্তিতে থাকা বারো ক্লাস পাশ করলে হবে কি, কেউ যে কাজ দেয় না তাই পেটের তাগিদে প্রথমে চিতপুরে, খিদিরপুর, হাওড়া, বড় বাজারে গিয়ে কুলি গিরি করল, এই ভাবে জীবনের শুরুর দিক বেশ কিছুটা কাটে।


এই বস্তির মনসা মাসি ওকে রাতে খেতে দিত আর এই পায়রার খুপরির মতন ঘরেই রাত কাটাত। মনসা মাসির বর ওকে ট্যাক্সি লাইনে আনে, সেই থেকে ট্যাক্সি চালায়। মনসা মাসি টিবি হয়ে মারা গেল আর সেই ঘরে বিষ্টু আর ময়না ঘর বাঁধল। ছোটবেলা থেকে পড়াশুনার বড় শখ ছিল, বারো ক্লাস পর্যন্ত পড়েছিল তাই ইংরাজিটা পড়তে পারত। মাঝে মাঝেই ডেবোনেয়ার, ফ্যান্টাসি, চ্যাসটিটি ইত্যাদি ইংরাজি পরনোগ্রাফির বই কিনে আনত, তাতে ওর দুটো কাজ একসাথে হয়ে যেত, এক ইংরাজি পড়া আর দ্বিতীয় ওই নগ্ন মেয়েদের ছবি দেখে আত্মরতি করা। ট্যাক্সি চালানোর পরে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড টিভি কেনে, বেশির ভাগ সময়ে ইংরাজি সিনেমা দেখে কাটায়, মন দিয়ে ওদের কথোপকথন শোনে আর মাঝে মাঝে মনে মনে আউরায়। ইংরেজি সিনেমার নায়িকা গুলো সবাই বেশ রসে ভরা, কম জামাকাপড় পরে সমুদ্র সৈকতে শুধু মাত্র বিকিনি পরে ঘুরে বেড়ায়।


এই কালীপাড়ার বস্তির কার দেয়াল কোথায় শুরু আর কোথায় শেষ সেটা বলা মুশকিল। দরমার বেড়ার অপাশে বিষ্টুর ঘর। পুরুলিয়ার কোন এক নাম না জানা গ্রাম থেকে বিষ্টু আর ময়না পালিয়ে এসেছে এই মহানগরের আলেয়ার হাতছানির ডাকে। পাশা পাশি ঘর বলে বিষ্টু ময়নার সাথে দানার তুই তোকারির সম্পর্ক। বিষ্টু হাওড়া লাইনে বাস চালায় আর ময়না লোকের বাড়িতে কাজ করে। ময়নার কথা মনে পরলেই দানার বুকের রক্ত চঞ্চল হয়ে ওঠে। রোজ দিন সকালে ওই কচি শরীরে শাড়ি জড়িয়ে কাজে বের হয়ে যায় ময়না। গায়ের রঙ কালো হলে কি হবে দেখতে বেশ ডাগর, কচি বয়স, বুকের ওপরে যেমন রসে টইটম্বুর স্তন জোড়া তেমনি সুন্দর গোল পাছা, স্তন জোড়া হাতের থাবার চেয়ে বেশ বড় বড় দলাই মালাই করতে বেশ লাগবে। ঠোঁট দুটো পুরু, নাক একটু বোঁচা কিন্তু চোখ দুটো বেশ বড় বড় আর কাজল কালো। ব্লাউসটা যেন ইচ্ছে করেই ছোট করে বানিয়েছে না ওর চোখের ভুল। স্তন জোড়া ব্লাউসের বাঁধনে হাঁসফাঁস করে আর উঁচু শৃঙ্গের মতন উঁচিয়ে থাকে সবসময়ে। আঁচলটা দিয়ে আর কত ওই জোড়া রসের ভান্ড ঢাকা যায়, কিন্তু ময়না চেষ্টা করে আঁচলে ঢাকতে। শাড়ির গিঁট নাভির এক মাইল নিচে। পেটে কোমরে ঠিক অতটাই মেদ যতটা দলাই মালাই করে চটকাতে ভালো লাগে। সকাল সকাল কাজে বের হলে দানা উঁকি মেরে একবার ময়নাকে দেখে। পাছায় কোমরে ছন্দ তুলে ওর দিকে একটা চোরা হাসি দিয়ে কাজে বেড়িয়ে যায়। ওর যাওয়ার পথের দিকে অনেকক্ষণ চেয়ে থাকে দানা, পিঠের ওপরে দুলতে থাকে কালো সাপের মতন লম্বা বেনুনি।


বিষ্টু রোজ রাতে মদ খেয়ে এসে কচি বৌ ময়নাকে যখন বিছানায় ফেলে ভোগ করে তখন ওর লিঙ্গ দাঁড়িয়ে যায়। “উহহহ আহহহহ উম্মম্ম ইসসসস একটু জোরে একটু জোরে, কর কর চটকাও চটকাও… আহহহহ” কচি ময়নার আবেগের শীৎকার আর দেহের মিলনের পচপচ থপথপ আওয়াজে সারা রাত আর ওকে ঘুমাতে দেয় না। কান পেতে শোনে ওদের চরম খেলার আওয়াজ, মাঝে মাঝে বেড়ার ফাঁক দিয়ে দেখতে চেষ্টা করে নগ্ন কচি ময়নাকে।


রোজ দিন রাতে বিষ্টু যখন মদ খেয়ে এসে একটানে ময়নার শাড়ি শায়া খুলে ফেলে তখন ও দেখেতে পায় যে দুই পায়ের মাঝের কালো কুঞ্চিত কেশ। দুই মসৃণ উরু স্ফটিকের থামের মতন বাল্বের আলোতে চকচক করে। উঁচু উঁচু স্তন জোড়া কালো আর তার চেয়ে বেশি কালো ওর স্তনের বোটা জোড়া। বিষ্টুর কামড়ানো মোচড়ানোতে স্তনের বোঁটা জোড়া হিমালয়ের শৃঙ্গের মতন উঁচিয়ে যায় আর ওকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। মদ খেয়ে কতখন আর সঙ্গম করে বিষ্টু, মিনিট দশেক এদিক ওদিকে হাত লাগিয়ে চটকা চটকি করে ময়নার পা দুটো দুই দিকে ফাঁক করে দেয়। বেড়ার ফাঁক দিয়ে তখন ওর কালচে গোলাপি যোনি দেখতে পায়, রসে ভরা যোনি উপচে পরে, চকচক করে ওঠে নরম গোলাপি নারীত্বের লজ্জা। দানার নোলা শোঁক শোঁক করে ওঠে, একবার ওই ঠোঁটে চুমু খেয়ে সব রস যদি চাটতে পারত তাহলে কত মধু সেটা বুঝতে পারত। বিষ্টু এক ধাক্কায় ওর লিঙ্গ ময়নার কচি যোনির মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে কোমর নাচানো শুরু করে দেয়। সেইসাথে এলো পাথারি ময়নাকে থাপ্পর মারে আর স্তন চটকায়, ব্যাথায় আর সঙ্গম সুখে ময়না কাতরাতে শুরু করে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিষ্টু ঝোল ঝেড়ে দেয় ময়নার গোলাপি কচি যোনির মধ্যে। বিষ্টু ঘুমিয়ে পড়তেই ময়না দুই পায়ের মাঝে তর্জনী আর মধ্যমা ঢুকিয়ে ভেতর বাহির করে রাগ স্খলন করে। সঙ্গম শেষে কোন রকমে মেঝে থেকে উঠে নিজেকে ধুয়ে নেয় আর উলঙ্গ হয়েই শুয়ে পরে।


কোন কোন দিন ময়না কাজের পরে ক্লান্ত হয়ে যায় কিন্তু তা স্বত্বেও বিষ্টুর ঝোল ঝাড়া চাই। ময়নার শাড়ি শায়া ছিঁড়ে একপ্রকার আদিম অমানুষিক খেলায় মেতে ওঠে বিষ্টু। দুই হাত মাথার ওপরে বেঁধে দেয়, এলো পাথারি চড় চাপর মেরে গালাগালি দিতে দিতে ওর কচি যোনির মধ্যে কালো কুচকুচে লিঙ্গ ঢুকিয়ে সঙ্গমে রত হয়। ময়নার মুখ বাঁধা, ছলছল চোখ চিৎকার করার জোর টুকু পায়না, একপাসে মাথা বেঁকিয়ে চোখ বন্ধ করে পরে থাকে ওই পশুর নিচে। তখন দানার মনে হয় ময়নার উলঙ্গ শরীরের ওপর থেকে বিষ্টুকে সরিয়ে ঝাপিয়ে পরে, কিন্তু কিছুতেই আর পারে না।


দানা একবার বেড়ার ফুটো দিয়ে দেখতে চেষ্টা করল ওইপারে, বিষ্টু কি এসেছে, ময়না কি করছে? এই অন্ধকারে কিছুই ঠিক ভাবে দেখতে পেল না ওই পাড়ের খবরা খবর। রুটি চেবান শেষ হল আর সেই সাথে মোমবাতিটাও জ্বলে জ্বলে শেষ হয়ে গেল। মোমবাতিটা যেন ওর খাওয়া শেষের অপেক্ষা করে বসেছিল। চারপাশে হটাত করে ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসতেই মশার উপদ্রবটা যেন বেশি বেড়ে গেল। এই মশা গুলো কি করে অন্ধকারে দেখতে পায়, ওরা কি টর্চ নিয়ে ঘোরা ফেরা করে নাকি? লুঙ্গিটা কষে বেঁধে হাতড়ে হাতড়ে প্যান্টের পকেট থেকে বিড়ি বের করে একটা ধরাল। আজ রাতে এইখানে আর শোয়া যাবে না, বিছানা ভিজে গেছে, কাঁথা ভিজে গেছে আর পাশের বাড়ির ময়নাও নেই। ময়না থাকলে না হয় ওই ভিজে বিছানার ওপরে শোয়া যায়।


মাদুরটা বগল দাবা করে আর ঝালমুড়ি আর চোলাই ভরা প্লাস্টিক সাথে নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে দৌড় লাগাল রাস্তার ওপারে। সামনের ফাঁকা জায়গা গুলতে সব ফ্লাট হয়ে যাচ্ছে। এই মহানগরের বুকে আর কোন ফাঁকা জায়গা বেঁচে নেই। কোনোদিন ওদের এই কালীপাড়ার বস্তি উঠে যাবে, কোন এক টাকা অয়ালা লোক বেনামে এই জমি কিনে এর ওপরে বহুতল বানিয়ে নেবে। ইট, কাঠ পাথরের কাঠামো নিয়ে দাঁড়িয়ে ওই নির্জীব কংক্রিটের জঙ্গল। বছর চারেক আগে পর্যন্ত সামনের মাঠে ছেলেরা ফুটবল খেলত, মাঝে মাঝে ও খেলতে যেত। সামনের দাঁড়ানো কিছু ফ্লাটে লোকজন এসে গেছে, কিছু ফ্লাট তখন তৈরি হচ্ছে, আজ রাত ওই একটা অসম্পূর্ণ ফ্লাটেই রাত কাটাতে হবে।


ফ্লাটের সিঁড়ি দিয়ে এক দৌড়ে চার তলায় উঠে গেল। এক তলায় কুকুর গরুর বাস আর মাঝে মাঝে গাঁজা ড্রাগস টানার দল রাতে এসে উৎপাত করে, তবে ওরা কেউ চার তলায় ওঠে না। চার তলায় ওঠার একটা বড় কারন আছে দানার, সামনের ফ্লাট বাড়ির চারতলায় বেশ কয়েকখানা ফ্লাট তার মধ্যে একটার বসার ঘরের জানালা ভালো ভাবে দেখা যায় আর সেই খোলা জানালা দিয়ে দেয়ালে বসানো বিশাল টিভি দেখা যায়। অত দুর থেকে শব্দ ঠিক শোনা যায় না তবে ছবি দেখেই মন শান্তি করে। মাঝে মাঝে ওই টিভিতে খেলা দেখে আর দেখে ওই বসার ঘরের নরম সোফার ওপরে ওই বাড়ির মালিক আর মালকিনের সঙ্গম। মাঝ বয়সি বউ, ছেলে মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে ছোট ফিনফিনে লঞ্জারি পরে নিজের মাঝ বয়সি বরের সাথে চরম সঙ্গমে মত্ত হয়।


ঠিক তার পাশের ফ্লাটে একটা কচি মেয়ে থাকে, চারতলা থেকে ওই মেয়েটার শোয়ার ঘর দেখা যায়। কোনোদিন জানালা খোলা থাকলে সেই মেয়েটার অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে পায়। মনে হয় বড় লোক বাড়ির মেয়ে, দুর বড় লোক না ছাই আজকাল মধ্যবিত্তরা টাকা দেখেছে তাদের বেশ ভুষাও পালটে গেছে। তবে ওই তন্বী মেয়েটা দেখতে ভারি সুন্দরী। ফর্সা গায়ের রঙ, ডাগর চেহারা, টানা টানা চোখ, কাঁধ অবধি নেমে আসা ঢেউ খেলা চুল একদম সিনেমার হিরোইনদের মতন। মেয়েটার নাম জানে না, নিশ্চয় সুন্দরী যখন তখন বাবা মা একটা ভালো নাম রেখেছে।


আর আছে বাকি ………… 

Previous Post Next Post